আদিপুস্তক 46 SBCL

যাকোব মিসরে রওনা হলেন

1 ইস্রায়েল তাঁর সব কিছু নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন। বের্‌-শেবাতে এসে তিনি তাঁর বাবা ইস্‌হাকের ঈশ্বরের উদ্দেশে কয়েকটা উৎসর্গের অনুষ্ঠান করলেন।

2 ঈশ্বর রাতের বেলায় ইস্রায়েলকে দর্শনের মধ্য দিয়ে তাঁর সংগে কথা বললেন। তিনি ডাকলেন, “যাকোব, যাকোব।”যাকোব উত্তর দিলেন, “এই যে আমি।”

3 ঈশ্বর বললেন, “আমি ঈশ্বর, তোমার বাবার ঈশ্বর। মিসর দেশে যেতে ভয় কোরো না, কারণ আমি সেখানে তোমার মধ্য থেকে একটা মস্ত বড় জাতির সৃষ্টি করব।

4 আমি তোমার সংগে সংগে মিসরে যাব এবং আবার আমি তোমাকে নিশ্চয়ই ফিরিয়ে নিয়ে আসব। মৃত্যুকালে যোষেফ নিজের হাতে তোমার চোখ বন্ধ করে দেবে।”

5 এর পর যাকোব বের্‌-শেবা ছেড়ে রওনা হলেন। ফরৌণ তাঁদের নিয়ে যাবার জন্য যে সব গাড়ী পাঠিয়েছিলেন ইস্রায়েলের ছেলেরা তাতে করেই তাদের বাবাকে এবং স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের নিয়ে চলল।

6 যে সব পশু ও ধন-সম্পত্তি তারা কনান দেশে লাভ করেছিল সেই সব নিয়ে যাকোব ও তাঁর পরিবারের সবাই মিসরে গেলেন।

7 যাকোব তাঁর ছেলেমেয়ে ও নাতি-নাত্‌নীদের, অর্থাৎ তাঁর বংশের সবাইকে নিয়ে মিসরে গেলেন।

যাকোবের বংশ-তালিকা

8 ইস্রায়েলীয়েরা, অর্থাৎ যাকোব ও তাঁর বংশের লোকেরা যারা মিসরে গিয়েছিল তাদের তালিকা:যাকোবের বড় ছেলে রূবেণ।

9 রূবেণের ছেলে হনোক, পল্‌লু, হিষ্রোণ ও কর্মি।

10 শিমিয়োনের ছেলে যিমূয়েল, যামীন, ওহদ, যাখীন, সোহর ও শৌল। শৌল একজন কনানীয় স্ত্রীলোকের সন্তান।

11 লেবির ছেলে গের্শোন, কহাৎ ও মরারি।

12 যিহূদার ছেলে এর, ওনন, শেলা, পেরস ও সেরহ। এর ও ওনন কনান দেশেই মারা গিয়েছিল। পেরসের ছেলে হিষ্রোণ ও হামূল।

13 ইষাখরের ছেলে তোলয়, পূয়, যোব ও শিম্রোণ।

14 সবূলূনের ছেলে সেরদ, এলোন ও যহলেল।

15 মেয়ে দীণা সুদ্ধ এরা ছিল লেয়ার মধ্য দিয়ে যাকোবের বংশধর। এরা পদ্দন-অরামে জন্মেছিল। যাকোবের এই বংশধরেরা ছিল মোট তেত্রিশজন।

16 গাদের ছেলে সিফিয়োন, হগি, শূনী, ইষ্‌বোন, এরি, অরোদী ও অরেলী।

17 আশেরের ছেলে যিম্না, যিশ্‌বা, যিশ্‌বি, বরিয় ও তাদের বোন সেরহ। বরিয়ের ছেলে হেবর ও মল্কীয়েল।

18 লাবন তাঁর মেয়ে লেয়াকে সিল্পা নামে যে দাসী দিয়েছিলেন এরা সবাই তার মধ্য দিয়ে যাকোবের বংশধর। সিল্পা ও যাকোবের এই বংশধরেরা ছিল মোট ষোলজন।

19 যাকোবের স্ত্রী রাহেলের ছেলে যোষেফ ও বিন্যামীন।

20 যোষেফের ছেলে মনঃশি ও ইফ্রয়িম মিসর দেশে জন্মেছিল। এদের মা ছিলেন ওন্‌ শহরের পুরোহিত পোটীফেরের মেয়ে আসনৎ।

21 বিন্যামীনের ছেলে বেলা, বেখর, অস্‌বেল, গেরা, নামন, এহী, রোশ, মুপ্‌পীম, হুপ্‌পীম ও অর্দ।

22 এরা ছিল রাহেলের মধ্য দিয়ে যাকোবের বংশধর। এরা ছিল মোট চৌদ্দজন।

23 দানের ছেলে হূশীম।

24 নপ্তালির ছেলে যহসিয়েল, গূনি, যেৎসর ও শিল্লেম।

25 লাবন তাঁর মেয়ে রাহেলকে বিল্‌হা নামে যে দাসী দিয়েছিলেন, এরা সবাই তার মধ্য দিয়ে যাকোবের বংশধর। যাকোব ও বিল্‌হার এই বংশধরেরা মোট ছিল সাতজন।

26 যাকোবের সংগে যারা মিসর দেশে গিয়েছিল, অর্থাৎ তাঁর নিজের বংশধরেরা ছিল মোট ছেষট্টিজন; এই সংখ্যার মধ্যে তাঁর ছেলেদের স্ত্রীদের ধরা হয় নি।

27 মিসর দেশে যোষেফের যে দু’টি ছেলের জন্ম হয়েছিল এবং যাকোবের পরিবারের যারা মিসরে গিয়েছিল তারা ছিল মোট সত্তরজন।

গোশন এলাকায় যাকোব

28 যাকোব আগে যিহূদাকে যোষেফের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন যাতে যোষেফ যিহূদাকে গোশনে যাবার পথ দেখিয়ে দেন। শেষ পর্যন্ত তাঁরা সবাই সেখানে গিয়ে উপস্থিত হলেন।

29 যোষেফ তাঁর বাবা ইস্রায়েলের সংগে দেখা করবার জন্য তাঁর রথ সাজিয়ে নিয়ে গোশনে গেলেন। বাবার সংগে দেখা হতেই তিনি তাঁর গলা জড়িয়ে ধরে অনেকক্ষণ কাঁদলেন।

30 পরে ইস্রায়েল যোষেফকে বললেন, “তুমি যে এখনও বেঁচে আছ তা আমি নিজের চোখেই দেখলাম। এখন আমি মরতে প্রস্তুত আছি।”

31 এর পর যোষেফ তাঁর ভাইদের ও তাঁর বাবার পরিবারের অন্যান্য লোকদের বললেন, “আমি ফরৌণের কাছে গিয়ে বলব, ‘আমার ভাইয়েরা ও আমার বাবার বংশের লোকজন কনান দেশ থেকে আমার কাছে এসেছেন।

32 পশুপালনই তাঁদের কাজ; তাঁরা ছাগল-ভেড়া চরান, আর সেইজন্য সংগে করে তাঁরা তাঁদের ছাগল, ভেড়া, গরু ও সমস্ত জিনিসপত্র এনেছেন।’

33 ফরৌণ তোমাদের ডেকে যখন জিজ্ঞাসা করবেন, ‘আপনারা কি কাজ করেন? ’

34 তখন তোমরা বলবে, ‘আপনার এই দাসেরা ও তাদের পূর্বপুরুষেরা ছোটকাল থেকে এই পর্যন্ত পশু পালন করে আসছে।’ তাতে তোমরা গোশনে বাস করবার অনুমতি পাবে। যারা ছাগল-ভেড়া চরায় মিসরীয়েরা তাদের ঘৃণার চোখে দেখে।”

অধ্যায়

1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50