1 ঈশ্বর নোহ আর তাঁর ছেলেদের আশীর্বাদ করে বললেন, “তোমরা বংশবৃদ্ধির ক্ষমতা দ্বারা সংখ্যায় বেড়ে ওঠো এবং পৃথিবী ভরে তোলো।
2 পৃথিবীর সব জীবজন্তু, আকাশের পাখী, বুকে-হাঁটা প্রাণী, আর সমুদ্রের মাছ তোমাদের ভীষণ ভয় করে চলবে। এগুলো তোমাদের হাতেই দেওয়া হল।
3 জীবন্ত ও ঘুরে বেড়ানো সমস্ত প্রাণীই তোমাদের খাবার হবে। খাবার হিসাবে আমি আগে যেমন তোমাদের শস্য ও শাক-সব্জী দিয়েছিলাম তেমনি এখন এই সবও তোমাদের দিলাম;
4 কিন্তু প্রাণ সুদ্ধ, অর্থাৎ রক্ত সুদ্ধ মাংস তোমরা খাবে না।
5 কেউ যদি তোমাদের খুন করে তবে আমি নিশ্চয়ই তোমাদের রক্তের বদলে তার রক্ত, অর্থাৎ তার প্রাণ দাবি করব, সে পশু হোক বা মানুষ হোক। মানুষের প্রাণ যে মানুষ নেয় তারও প্রাণ নিতে হবে- এ-ই আমার দাবি।
6 ঈশ্বর মানুষকে তাঁর মত করেই সৃষ্টি করেছেন; সেইজন্য কোন মানুষকে যদি কেউ খুন করে তবে অন্য একজনকে সেই খুনীর প্রাণ নিতে হবে।
7 তোমরা তোমাদের বংশবৃদ্ধির ক্ষমতা দ্বারা নিজেদের সংখ্যা বাড়িয়ে তোলো। তোমরা পৃথিবীর চারদিকে ছড়িয়ে পড় এবং নিজেদের সংখ্যা আরও বাড়াও।”
8-10 পরে ঈশ্বর নোহ ও তাঁর ছেলেদের বললেন, “তোমাদের ও তোমাদের বংশধরদের জন্য এবং যে সব জীবজন্তু তোমাদের সংগে ছিল, অর্থাৎ যে সব পাখী এবং গৃহপালিত ও বন্য পশু তোমাদের সংগে জাহাজ থেকে বের হয়ে এসেছে- এক কথায় পৃথিবীর সমস্ত জীবজন্তুদের জন্য আমি এখন আমার এই ব্যবস্থা স্থাপন করছি।
11 সেই ব্যবস্থা হল এই যে, বন্যার জল দিয়ে আর কখনও সমস্ত প্রাণীকে মেরে ফেলা হবে না এবং গোটা পৃথিবী ধ্বংস করে দেবার মত বন্যাও আর হবে না।”
12-13 ঈশ্বর আরও বললেন, “যে ব্যবস্থা আমি তোমাদের ও তোমাদের সংগের সমস্ত প্রাণীর জন্য স্থাপন করলাম তা বংশের পর বংশ ধরেই চলবে। সেই ব্যবস্থার চিহ্ন হিসাবে মেঘের মধ্যে আমি আমার মেঘধনুক দেখাব। এটাই হবে পৃথিবীর জন্য আমার সেই ব্যবস্থার চিহ্ন।
14 যখন আমি উপরে মেঘ জমা করব তখন তার মধ্যে এই ধনুক দেখা দেবে,
15 আর তখনই তোমার এবং সমস্ত জীবজন্তুর জন্য আমার এই ব্যবস্থার কথা আমি মনে করব। এতে জল আর কখনও বন্যা হয়ে সমস্ত প্রাণীকে ধ্বংস করবে না।
16 মেঘের মধ্যে যখন সেই ধনুক দেখা দেবে তখন আমি তা দেখে পৃথিবীর সমস্ত প্রাণীর জন্য আমার এই চিরস্থায়ী ব্যবস্থার কথা মনে করব।”
17 ঈশ্বর তারপর নোহকে বললেন, “পৃথিবীর সমস্ত প্রাণীর জন্য আমি যে ব্যবস্থা স্থাপন করেছি এটাই হল তার চিহ্ন।”
18 জাহাজ থেকে নোহের ছেলে শেম, হাম আর যেফৎ বের হয়ে এসেছিলেন। পরে কনান নামে হামের একটি ছেলে হয়েছিল।
19 নোহের এই তিন ছেলের বংশধরেরাই সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছিল।
20 নোহ চাষ-আবাদ করতে আরম্ভ করলেন এবং একটা আংগুর ক্ষেত করলেন।
21 তিনি একদিন আংগুর-রস খেয়ে মাতাল হলেন এবং নিজের তাম্বুর মধ্যে উলংগ হয়ে পড়ে রইলেন।
22 কনানের বাবা হাম তাঁর বাবার এই অবস্থা দেখলেন এবং বাইরে গিয়ে তাঁর দুই ভাইকে তা জানিয়ে দিলেন।
23 কিন্তু শেম আর যেফৎ নিজেদের কাঁধের উপরে একটা কাপড় নিলেন এবং পিছু হেঁটে গিয়ে তাঁদের বাবাকে ঢেকে দিয়ে আসলেন। তাঁদের মুখ উল্টাদিকে ফিরানো ছিল বলে বাবার উলংগ অবস্থা তাঁদের চোখে পড়ল না।
24 নেশা কেটে গেলে পর নোহ তাঁর ছোট ছেলের ব্যবহারের কথা জানতে পারলেন।
25 তখন তিনি বললেন, “কনান অভিশপ্ত হোক। সে তার ভাইদের সবচেয়ে নীচু ধরনের চাকর হোক।”
26 তিনি আরও বললেন, “ধন্য শেমের ঈশ্বর সদাপ্রভু। কনান শেমের চাকর হোক।
27 ঈশ্বর করুন, যেফৎ যেন অনেক জায়গা জুড়ে থাকে। সে শেমের তাম্বুতে বাস করুক আর কনান তার চাকর হোক।”
28 বন্যার পরে নোহ আরও সাড়ে তিনশো বছর বেঁচে ছিলেন।
29 মোট সাড়ে ন’শো বছর বেঁচে থাকবার পর তিনি মারা গেলেন।